সেদিন দেশের স্বাধীনতা দিবস। দ্বিখন্ডীকরণ দিবসও বলে নিন্দুকেরা। পরবর্তিকালে আরও এক খন্ড। স্কুলে স্কুলে, ক্লাবে ক্লাবে উড়ছে ত্রিবর্ণ পতাকা। তিন বর্ণের তিনটি কাপড়ের খন্ড সেলাই করে এক খন্ডতে মিলিতকরণ। এক, তবুও আলাদা। পাশাপাশি নয়, উপর-নীচ অবস্থান। ধর্মজীবি, সাদা কলারের চাকুরিজীবি আর কৃষি-শ্রমজীবিদের সবার দেশের পতাকা। বুননের সময় একত্রিকরণের কথাটা মাথায় রেখে ত্রিবর্ণ কাপড়টি তৈরী হয়নি। প্রয়োজনের সময় তিনটিকে চেপে ধরে, সেলাই মেশিনে ফুটো ফুটো করে, সরু, দুর্বল সুতো দিয়ে জুড়ে দেওয়া। কার্যকালে কর্মোপযোগী হওয়া নিয়ে কথা। মাঝখানে অশোকচক্রের ছাপ লাগানো। তার রঙ কালচেনীল। অবশ্য ভালোভাবে লক্ষ না করলে দূর থেকে কালচে রঙটি চোখে পড়েনা, চাঁদের কলঙ্কের মতন যেন অনেকটা।
প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলের বাগ্মী নেতা বাগ্চীদা ক্লাবের মাঠের প্রান্তে মঞ্চে আসীন। পরণে নেতার মত পোষাকই বটে, চাষাভুষোদের মতনএকদম নয়। পতাকা উত্তোলন হয়ে গেছে। মাঠে প্রায় শ’দেড়েক মানুষ, অধিকাংশই মাটিতে বসে, কেউ কেউ অবশ্য দাঁড়িয়ে। তাদের উদ্দেশে নেতার ভাষণ।
“আমার সামনে উপস্থিত সমাজের সমস্ত মূলস্রোতের মানুষ, দলিত ও সংখ্যালঘু, আমরা আসলে তিন ভাই, একই ভারতমাতার সন্তান…।“
ভিড়ের মধ্যে জ্বলন্ত বিড়ি হাতে পরাণ বর্মণ পাশে সবুজ ঘাসের উপর বসা, সবুজ গামছা-কাঁধে অছিমুদ্দিনের দিকে একটি বিড়ি বাড়িয়ে দিয়ে বলল, “উনারা তিন ভাই নাকি?” অছিমুদ্দিন বিড়িটি নিয়ে বৃ্দ্ধাঙুল ও তর্জনিতে চেপে ধরে কানের কাছে নিয়ে, দুই আঙ্গুল দিয়ে কয়েকটি পাক দিয়ে, বিড়িটির উল্টোদিকটি ঠোঁটে ঠেকিয়ে দুইবার ফুঁ দিয়ে, ট্রাক্টরের ফলার মতন সামনের দিকে বাঁকানো ছুঁচলো দাড়িগোছা দুইবার ওঠানামা করিয়ে উত্তর দিল, “তাইতো কইল, মনে অইল।“ অদূরে অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে দাঁড়ানো, গেরুয়া পোশাক পরিহিত, কপালে চন্দনের টিপযুক্ত চক্রবর্তী মশাই-য়ের ভ্রূ কুঁচকে গেল, তারপর দৃষ্টি চলে গেল পাশে দন্ডায়মান, সোনার বোতামযুক্ত দুধ-সাদা গরদের পাঞ্জাবী পরিহিত বীরেশ্বর গোস্বামীর দিকে। দৃষ্টিতে বিরক্তি ও অবজ্ঞার ছাপ সুস্পষ্ট।কিছু একটা করার আহ্বানও প্রচ্ছন্নভাবে বর্তমান। গোস্বামী মুখে বিরক্তির অভিব্যক্তি ফুটিয়ে তুলে বলল, “যা বোঝনা, তা নিয়ে কথা বলতে যাও কেন? এসেছ, চুপচাপ বসে থাকো, বিড়ি খাও, তারপর লাড্ডু খেয়ে বাড়ি যাও। যত্তসব ছোট …।“
অদূরে একটি স্কুল। সেখানে পতাকা উত্তোলন, লাড্ডু বিতরণ, ভাষণদান—সব সমাপ্ত। স্কুলের তরুণ শিক্ষক গণেশ বর্মণ একজন বিতর্কিত ব্যক্তি। প্রত্যন্ত গ্রামের চাষি পরিবার থেকে উঠে আসা মানুষ। নিজে এক সময় পরের জমিতে জন-খাটার কাজও করেছে। পৈতৃকসূত্রে পেয়েছে দু’টি ভাই-বোনের পড়াশোনাসহ ভরণ-পোষণের ব্যয়ভার এবং মায়ের চিকিৎসার গুরু দায়িত্ব। ফলে স্কুলের বেতন অনেকের অভিমতে অনাবশ্যকভাবে অত্যধিক হলেও গণেশের ভাড়াবাড়িতে ভাঁড়ে মা ভবানী। আড়ালে কেউ কেউ মন্তব্য করে, লক্ষীর অনুপস্থিতির কারণে গণেশের স্বরযন্ত্রে সরস্বতীর সক্রোধ স্বর সততঃই সক্রিয়। স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকরা যা বলবেন, গণেশ তার উল্টো কিছু একটা বলবেই। ফলে সবাই গণেশের উপর বিশেষভাবে বিরক্ত। কিন্তু ওর শুয়োরখাওয়া, কাঠ-বাঙ্গাল, চাঁচাছোলা, গেঁয়ো মুখের সাথে পারা যায়না।
অনুষ্ঠান শেষ হতেই গণেশ বেরিয়ে পড়ল স্কুল থেকে। কিছুটা দূরে তার ভাড়াবাড়ি। রাস্তা ধরে হেঁটে আসতে আসতে গণেশ শুনতে পেল ক্লাবপ্রাঙ্গনের মঞ্চনিঃসৃ্ত ভাষণ—
“এখনও আমরা প্রকৃ্ত স্বাধীনতা পাইনি। এখনও দেশের চল্লিশ শতাংশ মানুষ দুইবেলা পেট ভরে খেতে পায়না…।“
না খেয়ে থাকার ভাষণ শোনার সময় গণেশের নেই। দেরি করে ঘরে ফিরলে তাকেও আজ ওই চল্লিশ শতাংশের দলে পড়তে হবে; রান্নার দিদি ফিরে যাবে। তাড়াতাড়ি একটু খাসির মাংস নিয়ে ফিরতে হবে। ক্লাবের মাঠের পাশেই রাস্তার ধারে অস্থায়ী দোকানে ঝুলছে খাসির আড়াইখানা মুন্ড-চর্মহীন দেহ। নীচে পড়ে আছে একটি কালো, একটি সাদা ও একটি কালচে সোনালী রং-এর চামড়া। ছাল ছাড়ানোর পর সব খাসিগুলির রং এক। পাশে দাঁড়িয়ে আছে আরও তিনটি জ্যান্ত খাসি। আসন্ন বিপদের পূর্বাভাসপ্রাপ্তির লক্ষণ বা কোনরূপ দুশ্চিন্তার কোন আভাস ওদের চোখে-মুখে নেই, অন্ততঃ মানবচক্ষুতে ধরা পড়েনা। কারণ ওদের সামনে দেওয়া হয়েছে ওদের প্রিয় খাদ্য কাঁঠালপাতা। নির্বাণপ্রাপ্ত দার্শনিকের নির্লিপ্ততায় চিবিয়ে চলেছে ওরা।
মঞ্চ থেকে ভেসে আসছে ভাষণ।
“বন্ধুগন, দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে, আমাদেরই কোন অসহায় প্রতিবেশী যখন বিপন্ন, তখন আমরা অনেকেই সেদিকে একটুও সমবেদনাপুর্ণ দৃষ্টি না দিয়ে, একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দিয়ে নিজেদের ভোগ-বিলাসে মত্ত থাকি। এটা গণতন্ত্রের লজ্জা। …”
গণেশ রাস্তার যে দিক দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল, খাসির দোকানটা তার উল্টোদিকে। রাস্তা পার হওয়ার জন্য গণেশ দাঁড়ালো। হঠাৎ দেখতে পেল, তারই স্কুলের ক্লাস সিক্স-এর ছাত্র মিন্টু বর্মা একটি ছোট বাজারের ব্যাগ নিয়ে দ্বিধাগ্রস্থভাবে দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে।
এই সেই মিন্টু, যাকে গণেশ একদিন মেরেছিল, হাতের লেখার খাতা না আনার কারণে। মিন্টুর মাথা নিচু করে জোয়ালে বাঁধা বলদের মতন প্রহৃত হওয়ার বিষয়টা কিছু ভালো ছেলে খুব উপভোগ করল। পরে গণেশ যখন জানতে পারল, ওর বাবা-মা খুব গরিব, ঠিক সময়ে খাতা-পেন্সিল কিনে দিতে পারেনা, তখন গণেশের মনটা খারাপ হয়ে গেল। তারপর থেকে মিন্টুকে গণেশ মাঝে মাঝে খাতা-পেন্সিল কিনে দেয়, বইয়ের কমপ্লিমেন্টারী কপিও দিয়েছে। এই মিন্টুর কারণেই সেদিন স্টাফরুমে প্রচন্ড বাগবিতন্ডা হয়ে গেল। ক্লাস থেকে ফিরে গণেশ হঠাৎ স্বভাবসিদ্ধ কাটা কাটা ভাষায় বলে উঠল, “আমি এক্সকারশনের বিরোধী।“ সঙ্গে সঙ্গে শুরু পার্লামেন্টের বিরোধী সাংসদদের মতন কয়েকজন শিক্ষকের তপ্ত, তীব্র, তাত্বিক বাক্যবাণ বর্ষণ, “তুমি কি বলতে চাও, যেসব শিক্ষাবিদরা দেশভ্রমণের উপকারিতা এবং প্রয়োজনীয়তার কথা বলে গেছেন, তারা সব মূর্খ?”
ঘটনার সূত্রপাত কয়েকদিন আগে। স্কুল থেকে কোলকাতায় সায়েন্স সিটি দেখাতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছাত্র-ছাত্রীদের চাঁদা নয়শ’ পঁচিশ টাকা। শিক্ষক-শিক্ষিকারা যেহেতু অন ডিউটি, সেহেতু তাঁদের চাঁদা লাগবেনা। ছাত্র-ছাত্রীদের যারা চাঁদার ওই টাকাটা দিতে পেরেছে তারা গেছে, আর যারা দিতে পারেনি তাদের যাওয়া হয়নি। শনিবারে দুপুরে যাত্রা শুরু। রবিবারে সায়েন্স সিটি দর্শন শেষ হলে বিকেলে খাওয়া-দাওয়া করে বিশ্রাম। রাতে আবার বাসে করে ফেরত যাত্রা। সোমবারে সকালে সবাই ফিরে এল; সেদিনও স্কুল ছুটি। তার পরদিন গণেশের প্রথম ক্লাস সিক্স-এ। গণেশ ক্লাসে ঢোকার সাথে সাথে কচি-কাঁচাদের কলকাকলিতে মুখোরিত হয়ে উঠল পুরো শ্রেণীকক্ষ। “স্যার, আপনার কোনটা সবচে’ ভালো লেগেছে?” “স্যার, আপনি আইস্ক্রীম খেয়েছিলেন?” “স্যার, আপনার ডাইনোসর দেখে ভয় করেনি?” “স্যার, আপনি ওই দোলনাটায় উঠেছিলেন?” “স্যার, তুমি সেই আয়নার ঘরটায় ঢুকেছিলে?” ইত্যাদি। টেবিলে ডাস্টার দিয়ে ঠক-ঠক করে গণেশ কলকাকলি থামালো। একে একে সবার প্রশ্নের উত্তর দিতে যাবে, এমন সময় লক্ষ করল, শ্রেণীকক্ষের যে কোনটিতে পাখার হাওয়া ও টিউবলাইটের আলো ঠিকমতন পৌঁছায়না, সেখানে ম্লানমুখে বসে আছে মিন্টু ও আরও তিনটি ছেলে। এরা চাঁদা দিতে পারেনি। গণেশ মিন্টুর দিকে তাকাতেই মিন্টু উঠে দাঁড়িয়ে গভীর অনুসন্ধিৎসু দৃষ্টি নিক্ষেপ করলো গণেশের চোখের দিকে। মৃদু কন্ঠে বলল, “স্যার, সাইন ছিটি দেখতে কেমন?” এক দৃষ্টে তাকিয়ে মিন্টু যেন সায়েন্স সিটির পুরো চিত্রটি খুঁজছে গণেশের মুখ-মন্ডলে। মিন্টু তাকিয়েই রইল কয়েক মুহূর্ত।
মাথা নিচু করে টেবিলের দিকে তাকিয়ে রইল গণেশ। যে গণেশের মুখের সাথে নাকি পারা যায়না, সে কেমন যেন বাক্যহারা হয়ে তোতলাতে লাগল। ঢোক গিলতে গিলতে অসংলগ্নভাবে যা বলল, তার সারমর্ম করলে এই দাঁড়ায় যে, সায়েন্স সিটিতে গিয়ে টাকার আদ্যশ্রাদ্ধ করার কোন মানে হয়না। এইরকম বাজে যায়গায় কেউ যায়? সময় নষ্ট, টাকা নষ্ট, গা-ব্যথা। যারা যায়নি তারা বুদ্ধিমানের কাজ করেছে। শিক্ষকের মিথ্যাচারে মিন্টুর ম্লান মুখে মৃদু হাসির একটি প্রশান্তিময় ঝিলিক খেলে গেল।
তারপরেই স্টাফ রুমে শিক্ষাতত্বের তপ্ত তরজার তড়িৎ-তরঙ্গ। গণেশের বক্তব্য, “সরকার যদি সমস্ত ছেলে-মেয়েদের, অন্ততঃ গরিব ছেলে-মেয়েদের এক্সকারশনের টাকাটা অনুদান দেয়, তবেই এক্সকারশন হবে; অন্যথায় কারও এক্সকারশন হবেনা।“ অপর পক্ষের প্রশ্ন, “যাদের এই সামান্য টাকাটা জোগাড় করার ক্ষমতা নেই তাদের লেখা-পড়ার শখ কেন, তাদের লেখা-পড়া করে হবেইটা বা কী?” গণেশ তৎক্ষনাৎ এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি।
সেই মিন্টু খাসির দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে। মিন্টু আর দোকানদারের কথোপকথন গণেশের কানে এল।
কাকু, টেংরি আছে?
না।
কেন? ওই তো, অতগুলো রয়েছে।
ওগুলোর অর্ডার হয়ে গেছে। বাগ্চিদা সবগুলো নেবে।
মিন্টুর চোখে-মুখে অবিশ্বাসের বহিঃপ্রকাশ সুস্পষ্ট। বাগ্চিবাবুরা তো বড়লোক। ওরা টেংরি খাবে কেন? মিন্টুর মনের কথা বুঝতে পেরে দোকাদারের অ্যাসিস্ট্যান্ট বলে, “আরে, বাগ্চিদার বাড়িতে দু-দু’টো কুকুর। ওরা মাংস ছাড়া খেতে পারে? তাছাড়া আজকে স্বাধীনতা দিবসে ওদের স্পেশাল মেনু হবেনা?“
আমাকে একটু দিলে কী হয়?
এ ছোড়া তো বোঝেনা। আরে, তাহলে আজকের দিনে কুকুরগুলো নুন-ভাত খেয়ে থাকবে, তাইতো? তোর যদি মাংস খাওয়ার এতই শখ হয়, যা না, তোর বাবার কাছ থেকে বেশী করে টাকা নিয়ে আয়। সিনার মাংস, থাই-এর মাংস, মেটে—যা মন চায় নিয়ে যাস।
সিনার মাংস! থাই-এর মাংস! মেটে! হ্যাঁ, মিন্টু খেয়েছিল। মনে পড়েছে। গত বছরের আগের বছর। পাশের বাড়ির কেষ্টকাকু বেশ অনেকটা এনে দিয়েছিল। রেল লাইনের ধারে ঝোপের মধ্যে কেষ্টর চোলাই মদের খুচরো দোকান। ফেরার সময় দেখে, একটা খাসি ট্রেনে কাটা পড়েছে। সেটি সাথে সাথে তুলে নিয়ে ছাল ছাড়িয়ে কেষ্ট নিয়ে আসে। কিছুটা মাংস মিন্টুদের বাড়িতেও দিয়েছিল। সিনা, থাই, মেটে—সবই ছিল তাতে। আহ্, তার কী স্বাদ! এখন ও যেন মিন্টু গন্ধ পাচ্ছে। মুখ-গহ্ববর লালায় ভর্তি হয়ে গেল। জিব দিয়ে যেন চুঁইয়ে পড়তে চাইছে, অদূরে উপবিষ্ট ওই তিনটি রাস্তার কুকুরের মতই। লালা সামলে নিল মিন্টু, পড়তে দিলনা, পড়ল একটি দীর্ঘশ্বাস।
মিন্টু কোন কথা না বলে, ঝুলন্ত খাসির দিকে কয়েক মুহূর্ত ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থেকে আস্তে আস্তে ঘুরে হাঁটতে শুরু করল। হাঁটতে হাঁটতেও কয়েকবার পিছনে ঘুরে ঝুলন্ত মাংসের দিকে তাকিয়ে দেখতে লাগল, যেরকমভাবে কুকুর তিনটি অনন্ত আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে। মিন্টুর দিকে তাকিয়ে রইল শুধু গণেশ। মিন্টু অনেকটা দূরে গিয়েও আর একবার ফিরে তাকাল। না, আর দেখা যাচ্ছেনা। অনেক, অ-নে-ক দূরে মাংসের টুকরোগুলির অবস্থান, মিন্টু হয়ত কোনদিন পৌঁছোতে পারবে না সেখানে।
গণেশ একবার ভাবল, কিছুটা মাংস কিনে মিন্টুর হাতে দিয়ে দিলে হত। কিন্তু পরক্ষণেই মনে হল, ওর মা-বাবা আবার কী ভাববে। পরের কাছ থেকে নিয়েছে বলে ওকে মারধর করে কিনা? গণেশ কী করি, কী করি করতে করতে মিন্টু অদৃশ্য হয়ে গেল।
মঞ্চে ভাষণ এখনও শেষ হয়নি।
“ভেবে দেখুন বন্ধু, আমরা শখ-আহ্লাদে কত টাকা অপচয় করি। তার থেকে সামান্য একটু বাঁচিয়ে যদি গরীব, মেহনতি, ক্ষুধার্ত মানুষের দিকে একটু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিই…।“
গণেশের হাত খালি দেখে রান্নার মহিলা জিজ্ঞেস করল,
দাদা, মাংস আনেন নাই?
না।
ক্যান? কাইল যে কইলেন, সাদিনাতা দিবস…।
না, মাংস খেতে হবেনা। আমরা তো বড়লোকের কুকুর নই।
মহিলা অবাক হয়ে হাঁ করে তাকিয়ে রইল।
ক্লাবের মাঠ থেকে তখন সুরসম্রাজ্ঞী লতা মঙ্গেশকরের সুরেলা কন্ঠ ভেসে আসছে, “সা রে জা হা সে আচ্ছা’।
Touchy and sensitive Galpo.
Thank you for your comment.