ব্রাত্য ভারত
কপিল কৃষ্ণ ঠাকুর
মঞ্চে ডাক পাননি বাল্মিকী
উৎসব প্রাঙ্গনের বাইরে অন্ধকার জারুলের নীচে
রাগে ফুসছেন বেদব্যাস
কেউ তাদের আমন্ত্রণ জানায়নি কবিতাসভায়।
আকাদেমির দরাজ মাইকের গলা উঁচিয়ে
ঘোষক বললেন, কোনও ব্রাত্যকেই এখানে ডাকা হয় না,
জনক্ষণেই মেধার দেবতা ওদের বর্জন করেছেন;
সবচেয়ে পেছনের দর্শকাসন থেকে
ক্রোধে হুঙ্কার দিলেন একজন নন্দিত মাহার,
মেধাবী কে, কৌলিন্যের অহঙ্কারই বা কী
যখন আমাকেই লিখতে হয় শাসনতন্ত্র?
পাটলিপুত্র থেকে নম্র পায়ে হেঁটে এসে
রাজপথে সমবেত জনতাকে অশোক বললেন,
এই দীন সেবককে কি মনে আছে আপনাদের?
লক্ষ কন্ঠে চীৎকার করে বলল,
আপনিই ই এ দেশের শ্রেষ্ঠ সম্রাট, প্রিয়দর্শী।
দাসীর পৌত্র শ্রেষ্ঠ সম্রাট! অশোক চমকে উঠলেন
জনতার মাথা হেঁট হয়ে এল নিমেষে।
গৌড়ের স্বর্ণযুগের পাল নৃপতি
চান্দেল, পুন্ড্রবর্ধণ, গঙ্গারিডি – ইতিহাসের আলোছায়ায়
একে একে মূর্ত হল ভূমিপুত্ররা;
জোড়াসাঁকোর প্রাসাদ থেকে নেমে এলেন রবি
বললেন, আমি কবি এদেরই দলে
আমি ব্রাত্য, আমি মন্ত্রহীন…
যারা বলেছিল, ওরা জন্মসূত্রেই প্রতিভাহীন
তারা ঘোষনাপত্র সন্তপর্ণে বুকে আঁকড়ে
সামনে এগিয়ে দেয় সুকৌশলী দ্রোণাচার্যকে,
ঘর্মাক্ত তিনি, সমস্ত বিদ্রোহী মুখে খুজতে থাকেন একলব্যের ছায়া…
এই প্রথম, কেউ আঙ্গুল ছিন্ন করে তাঁর দিকে এগিয়ে যায় না।
—