Rohit Bhemula

স্বপন বিশ্বাসের কবিতাঃ রোহিত ভেমুলার মৃত্যু এবং…

রোহিত মরেছে শুধু একবার–

অমনি ঝান্ডা হাতে শোরগোল তুলে

মাঠে নেমে গেছে সব লাল, নীল কালো-

লাভের হিসাবটুকু বুঝে নিতে হবে!

কেউ কি ভেবেছো, ভেমুলারা কতবার মরে?

বোধ-শক্তি হওয়া থেকে প্রতি পদে পদে

কতবার মরে তারা? দিন, ক্ষণ, পলে?

বাংলায় প্রচলিত কথা- তুমি তো ‘সোনার চাঁদ’

বুকে হাত দিয়ে বলো, কতবার তুমিকি বলোনি

এই কথা? কিংবা ভাবোনি একদিনও?

সহপাঠী, সহকর্মী– ভেমুলারা পাশে এলে

চুপ করে গেছ, ঘুরিয়েছ কথার মোচড়।

ভেবে দেখ, রোহিতকে তুমি কি মারনি বহু বার?

এইসব রোহিতেরা বার বার মরেই এসেছে।

কেউ বা নিয়েছে কেটে তীরন্দাজী হাতের আঙ্গুল,

কেউ বা দিয়েছে গলে ঘন্টি বেঁধে কুকুরের মতো

যাতে আগমনী বার্তা বাজে, ছায়া না মাড়াতে হয়।

কখনও সরেছে প্রিয়া নীচু জাত বলে-

শিক্ষক তাকিয়েছে আড়চোখে- মেপেছে রক্তের রঙ

সহপাঠী আদর করেছে ‘সোনার টুকরো’ বলে,

একে বলে বেঁচে থাকা? ভাবো, একে বলে বাঁচা?

রোহিত ভেমুলারা প্রতিদিন ক্ষণে ক্ষণে মরে।

শুধু মাঝে মাঝে সে মরণ ছবি হয়, খবরও হয়।

আর দুই হাতে ঝান্ডা নিয়ে লাভের হিসাব নিতে

কিছু লোক জড়ো হয়, চীৎকার করে।

তারপর সব চুপ। তারপর সবে মিলে

প্রতিদিন মেরে মেরে আর এক রহিতের অপেক্ষায় থাকে।

তবে জেনো-

রোহিতেরা একদিন আর মরবে না,

তারাও দু’হাত তুলে জীবনের ঝান্ডা ওড়াবে।

‘চতুর্থ দুনিয়া’ থেকে প্রকাশিত ‘শতবর্ষের বাংলা দলিত সাহিত্য’ গ্রন্থ থেকে।

আপনার কেমন লাগলো?

Click on a star to rate it!

Average rating 5 / 5. Vote count: 1

No votes so far! Be the first to rate this post.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *